অনেক সময় অনেক চেষ্টা করেও পড়া মনে থাকতে চায় না। ওই বিষয়গুলো আয়ত্ত করতে প্রয়োজন হয় বাড়তি মনোযোগ, অতিরিক্ত শ্রম। কিন্তু কিছু সহজ কৌশলের অবলম্বন করলেই আয়ত্ত করা সম্ভব আপাতদৃষ্টিতে যেগুলো কঠিন বিষয় মনে হয় সেগুলোকেও। উপায়গুলো জানিয়েছেন এনাম-উজ-জামান
জোরে পড়ো:
কঠিন বিষয়গুলো পড়ার সময় শব্দ করে উচ্চারণ করে পড়ো। শব্দ করে পড়া আর মনে মনে পড়ার মধ্যে পার্থক্য হলো, মনে মনে পড়ার সময় একটি ইন্দ্রিয় অর্থাৎ চোখের মাধ্যমে তথ্য পায় মস্তিষ্ক। অন্যদিকে শব্দ করে পড়ার মাধ্যমে চোখের সঙ্গে সঙ্গে শ্রবণেন্দ্রিয় বা কান দ্বারাও মস্তিষ্ক তথ্য পেয়ে থাকে। এর ফলে তথ্যটি আরও ভালোভাবে মস্তিষ্কে স্থান করে নেয়। তবে শুধু শব্দ করে পড়লেই হবে না। বিষয়টি বোঝার চেষ্টা করতে হবে। প্রয়োজনে বারবার পড়ো।
লিখে অভ্যাস করো:
কঠিন বিষয় লিখে লিখে পড়লে সহজে মনে থাকে। লিখে লিখে পড়লে অল্পসময়ে যেকোনো পড়া আয়ত্তে আসে। বিষয়টি আয়ত্তে এলে সম্পূর্ণ অংশ না দেখে আবার লেখো। লেখার পর নিজেই ভুলত্রুটি খুঁজে বের করো। ভুল বেশি হলে আবার পড়ে ফের লেখ।
স্বাচ্ছন্দ্যের সময় খুঁজে বের করো:
প্রতিটি মানুষ স্বতন্ত্র সত্তার অধিকারী। কারও মস্তিষ্ক সকালে ভালো কাজ করে, আবার কারও হয়তো গভীর রাতে। তোমার স্বাচ্ছন্দ্যের সময় কোনটা সেটা খুঁজে বের করো। কঠিন বিষয়টি সে সময়ে পড়বে। দেখবে সহজে আয়ত্ত করতে পারছ। এর জন্য প্রথমে বিভিন্ন সময়ে পড়তে বসে তোমাকে খুঁজে বের করতে হবে কোন সময়ে তোমার মস্তিষ্ক সবচেয়ে ভালো কাজ করে।
পরিমিত বিশ্রাম নাও:
একটা কিছু জানার পর মস্তিষ্কের সময় প্রয়োজন হয় সেই তথ্যগুলো গুছিয়ে সংরক্ষণ করতে। মূলত বিশ্রাম বা ঘুমের সময়ে মস্তিষ্ক এই কাজটি করে। মস্তিষ্কের জন্য পর্যাপ্ত বিশ্রাম তাই খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অনেকেই পরীক্ষা এলে নাওয়া-খাওয়া, ঘুম বাদ দিয়ে পড়তে শুরু করে। এতে লাভের থেকে ক্ষতিই হয় বেশি। মস্তিষ্কের সর্বোচ্চ কার্যকারিতার জন্য পরিমিত ঘুমাও, মস্তিষ্ককে বিশ্রাম দাও।
নিজেকে অনুপ্রাণিত করো:
নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পড়া আয়ত্ত করতে পারলে নিজেকে পুরস্কৃত করো। হয়তো এক কাপ চা খেলে। তেমনি নির্দিষ্ট সময়ে পড়া না করতে পারলে শাস্তির ব্যবস্থাও করতে হবে। যেমন পড়াটি শেষ না করে টেবিল থেকে উঠবে না। নিজেকে অনুপ্রাণিত করার জন্য এসব উদ্যোগ খুবই ফলপ্রসূ।
রিভিশন দাও:
পড়া একবার বুঝলে বা আয়ত্ত করলেই হয় না। সেটা কয়েকদিন পরপর রিভিশন দিতে হয়। আমাদের মস্তিষ্ক অপ্রয়োজনীয় তথ্য বা দীর্ঘদিন অব্যবহৃত তথ্য স্মৃতি থেকে মুছে ফেলে। অধিকাংশ সময় কঠিন বিষয়টি আমাদের পছন্দের বিষয় হয় না। ফলে এটি আমরা ভুলে যাই সহজেই। এই ভুলে যাওয়া প্রতিরোধ করা সম্ভব যদি আমরা নির্দিষ্ট সময় পরপর পড়াগুলো রিভিশন দিই।